পৃথা চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা
প্রিয় বর্ণমালা
১
যেন অনন্তকাল বসে আছি এইভাবে ভোরের কুয়াশায়। আমার চোখের সামনে একে একে খুলে যাচ্ছে শহরের পৃষ্ঠাগুলো আর খুলে যাচ্ছে অজস্র জানলা। কিছু ঘর থেকে উঁকি দিয়ে দেখছে কিছু মুখ, জলতরঙ্গের মত ভেসে আসছে নারীকণ্ঠের রিনিরিনি। বেলা যত বাড়তে থাকে শঙ্খচিলের মত ডানা মেলে দেয় সময়। আর আমি মনের আকাশে খুঁজতে থাকি আমার প্রিয় বর্ণমালা। কখন যে গাছে গাছে কৃষ্ণচূড়া লাল হয়ে গেছে টের পাই নি। কিছু লিখব বলে খাতা খুলে দেখি আমার পাতায় পাতায় কখন যেন লেখা হয়ে গেছে একুশে ফেব্রুয়ারির গান।
প্রিয় বর্ণমালা
২
এক দীর্ঘ মিছিলে দলে দলে চলেছে মানুষ। পায়ে পায়ে চলছে আলাপন। আমিও হাঁটছি তালে তাল মিলিয়ে তাদের সঙ্গে। যে গাছগুলো বিগত যাত্রাপথে নিষ্পত্র ছিল ক্রমশই ভরে উঠেছে কচি পাতায় আর আড়ালে আবডালে উঁকি দিচ্ছে রক্ত পলাশ, কৃষ্ণচূড়া। বড় উজ্জ্বল সেই রং। ক্রমশ ফুলে ফুলে সব গাছ ভরে গেলে ধ্বনিত হল গান। মিছিলে সামিল সবার পায়ে পায়ে বেজে উঠল জল-নূপুর। পায়ে পা মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাই ক্রমশ এগিয়ে চলেছে ভাষাহীন স্তব্ধতায় অনন্ত একুশে ফেব্রুয়ারির অন্তঃপুরে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন