ঈশানী রায়চৌধুরীর কবিতা
★ এক পৃথিবী
ধরো তুমি, অন্য দেশে গেছ কাজ করতে...
তোমার পাসপোর্ট নিয়ে নিয়েছে... এক কুঠরিতে গাদাগাদি করে ঠুসে রেখেছে
...খাবার নেই, শৌচালয় নেই
কাকে ডাকবে গলা চিরে? কোন ভাষায় ডাকবে ?
এদেশেও যদি অন্য রাজ্যে যাও পেটের টানে.....
হঠাৎ চাক্কা বন্ধ !
প্রাণের দায়ে ঘরের দিকে ছুটছ।খালি পা ফেটে চৌচির
.... বউয়ের কাঁখে নেতিয়ে পড়েছে শিশু !
ধর, বাড়ির কাছে এসে মুখ থুবড়ে পড়ল যে মেয়েটা...
সে কি মরার আগে মা বলেনি ?
যাকে গ্যাসচেম্বারে ঢোকানো হচ্ছে, সেও তো মাতৃভাষায় প্রার্থনা করেছিল.... মায়ের মুখ মনে করেছিল!
তবে কোন সাহসে তোমরা আমার মাকে ফাঁসিকাঠে তুলতে চাও ?
যতক্ষন আমার বুকে রক্তবিন্দু আছে আমি কি ঝাঁপিয়ে পড়বো না !
দস্যু তোমরা কজন!
আমরা এক পৃথিবী!
★ আটপৌরে
মাতৃভাষা তুমি কেমন দেখতে! আমার মায়ের মত আটপৌরে, শাড়িতে হলুদ,
হাতে মাছের গন্ধ!
নাকি শ্বেতশুভ্রা তুমি
সরস্বতী!
মা বললে বুকে যে ঝিলিক মারে, তেমন করে ডাকবো তোমায়.... নাকি বিদ্যে কমললোচনে বলবো!
যে চোখ আমায় পড়তে পারে.. জ্বর হয়েছে, না ক্ষিদে পেয়েছে । যে কোন চুরমার চন্দন হয়ে যায়
যার হাতে... তুমিই কি সে
মাতৃভাষা!
মাতৃভাষা, তুমি আমায় গান দিয়েছ..মা যেমন ভাত দেয়,
গল্প বলেছ..মা যেমন ঘুম পাড়ায় । বর্ণমালা হয়ে তুমি হাত ধরে আছ... যেমন হাত ধরে হাঁটতে শিখিয়েছিল মা!
তোমাকে বুকের থেকে উপড়ে নিতে দেব না কাউকে
লড়াই করবো !
ভাষা শহীদের রক্তের দিব্বি!
এই আমাদের শপথ !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন